বয়সের কারণে প্যাডেল চেপে রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হতো । রিকশার চাকা থেমে যাওয়ার পাশাপাশি ছেলে মেয়ে বিহীন বৃদ্ধা মা ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী নিয়ে সংসারের চাকাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছিল মোসলেম উদ্দিনের।
কোনো কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না তিনি, পায়ে চেপে রিক্সা চালিয়ে সারাদিনে মাত্র ৫০ থেকে ৬০ টাকা উপার্জন করতেন।
গত শুক্রবার অসহায় মোসলেম উদ্দিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী মানবিক সংগঠন সুকর্মা ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার শেখ সোহানা।
তিনি মোসলেম উদ্দিন কে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উপহার দিলেন। এতে আর প্যাডেল চাপা লাগবে না তার। সুকর্মা ফাউন্ডেশনের এ সহযোগিতা পেয়ে খুশিতে আত্মহারা মোসলেম উদ্দিন কেঁদে ফেলেন। এ সময় খুশিতে তাকে রিকশা করে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ান।
মোসলেম উদ্দিন বলেন, এই রিকশা আমার ও আমার পরিবারের অবলম্বন। রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতাম। কিন্তু বয়সের কারণে পায়ে ব্যথা পেতামা রিক্সা চালাতে, এখন আর প্যাডেল চাপতে হবে না। জীবনটা থেমে থেমে যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছিল। এখন সে জীবন সচল করলেন সুকর্মা ফাউন্ডেশনের শেখ সোহানা।
অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে সুকর্মা ফাউন্ডেশনের ফাউনডার শেখ সোহানা বলেন, মোসলেম উদ্দিন চাচার ছেলে মেয়ে কেউ নেই। রিক্সা চালিয়ে বৃদ্ধা মায়ের ভাত কাপড়, বড়ভাই এর স্ত্রী ও নিজের খরচ চালাতো। পাবনা পশ্চিমপাড়া ময়নামতি আক্কেল সাঁকো এলাকায় রোজার মাসে ইফতারি বিতরণ করতে গিয়ে দেখা পাই তার, এরপর বাসার ঠিকানা নিয়ে বাসায় যাই। কিছু দিতে চাই জানার পর উনি বললেন একটা ভালো রিকশা। হত-দরিদ্র মানুষটা রিকশা চালিয়ে টেনেছেন পুরো সংসার। ভাড়ার রিক্সা চালিয়ে কোনো রকমে চলে যাচ্ছিলো দিন।
বয়সের কারণে কোমরে মারাত্মক আঘাত পান, এরপর থেকে আর প্যাডেল চালিত রিক্সা চালানোতে জোর পান না, একদিন কষ্টে চালালে ৪-৫ দিন অসুস্থ শুয়ে-বসে থাকতে হয়।’‘নিতান্ত অসহায় এই মানুষটির পাশে দাঁড়িয়েছে সুকর্মা ফাউন্ডেশন। সুকর্মা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উপহার দেয়া হয়েছে। আশা করি, সুকর্মা ফাউন্ডেশনের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় তার অসহায়ত্ব ক্ষানিকটা হলেও লাঘব হবে। আমরা মনে করি মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।’
উল্লেখ্য সুকর্মা ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনা কালীল সময়ে বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন।