১৯৭১ সালের আজকের দিনে বরিশাল অঞ্চলের মধ্যে ঝালকাঠির রাজাপুর থানা সর্বপ্রথম পাকহানাদার মুক্ত হয়। বৃহত্তর বরিশালের মধ্যে রাজাপুরের আকাশে উড়ে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
১৪ নভেম্বর ১৯৭১ এর পর সারাদেশের ন্যায় রাজাপুরে মুক্তিযুদ্ধ আরো তীব্র হয়। দেশীয় দোসরদের সহায়তায় পাকবাহিনী সাধারণ নিরীহ জনগণকে ধরে এনে বধ্যভূমি সংলগ্ন খালের ঘাটে বেঁধে গুলি করে খালে ফেলে দেয়। লাশের গন্ধে ভারী হয়ে ওঠে আকাশ বাতাস।
তৎকালীন রাজাপুরের ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদকে জাঙ্গালিয়া নদীর পাড়ে গর্ত করে জীবন্ত মাটি চাপা দেয় দোসর হানাদাররা। ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাপুর থানা আক্রমণ করলে শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ। এ যুদ্ধে তৎকালীন থানা কমান্ডার কেরামত আলী আজদ এর নের্তৃত্বে প্রায় তিনশত মুক্তিযোদ্ধা অংশ গ্রহন করেন। পরদিন সকাল পর্যন্ত চলে যুদ্ধ। যুদ্ধ চলমান থাকা অবস্থায় ৯নং সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন শাহজান ওমর যোগ দেন। এ যুদ্ধে আব্দুর রাজ্জাক ও হোচেন আলী নামে দুজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। আহত হন ক্যাপ্টেন শাহজান ওমরসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযুদ্ধে সারা দেশকে ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। রাজাপুর থানা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৯ নং সেক্টরের বরিশাল সাব সেক্টরের অধীনে। উপজেলার কানুদাসকাঠিতে সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন শাহজান ওমর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি তৈরি করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শাহজাহান ওমর বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত হন। রাজাপুর প্রেসক্লাব প্রতি বছর নানান আয়োজনে এ দিবসটি উদযাপন করে আসছে।