আজ ৪ জুলাই রোববার লকডাউনের চতুর্থ দিনে অসুস্থ রেহেনার পাশে হাজির হলেন একঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবী। দাউদকান্দি উপজেলার কানড়া গ্রামে ‘নিরাপদ চিকিৎসা চাই’ কুমিল্লা’র তত্ত্বাবধানে একজন অসহায় ও হতদরিদ্র প্যারালাইসিস রোগীর চিকিৎসা চলছে দুই মাস যাবৎ। শুধু তাই নয়, রোগীকে একটি হুইল চেয়ার প্রদানসহ তার পরিবারের ঘর ভাড়া ও যাবতীয় খরচাদি বহন করছে এই সংগঠনটি। কিছু হৃদয়বান মানুষ এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বলেই তা সম্ভব হচ্ছে। আজ নিচিচা কুমিল্লা’র আহ্বায়ক কবি মো.আলী আশরাফ খান, প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম রাসেল, সভাপতি মোঃ সজীব সরকার বাবু, তরুণ স্বেচ্ছাসেবী মোঃ শাহাদাৎ ময়না, মোঃ আতিকুজ্জামান ওমি, মোঃ সোহান সরকার ও মোঃ আবুল বাসার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যায় রেহেনার ভাড়া বাসায়। যা পেয়ে রীতিমত হাসি ফোটে রেহেনার চোখে-মুখে। উল্লেখ্য যে, গত প্রায় ৩ মাস আগে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যায় রেহেনা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি হয়। ওইখানে ৩/৪ দিন চিকিৎসা শেষে তার পিতা তাকে নিয়ে দাউদকান্দির কানড়ায় একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। ওই বাসায় রেহেনা একটি হাত ও একটি পা অবশ অবস্থায় বেশ কয়েকদিন খেয়ে না খেয়ে বিছানায় পরে থাকে। এই খবর পেয়ে নিরাপদ চিকিৎসা চাই কুমিল্লা জেলা দাঁড়ায় রেহেনার পাশে। রেহেনার বাবা জানান, মেয়ের জামাই বিয়ে করে চলে যাওয়ার পর থেকেই তার এই সমস্যা দেখা দেয়। আমার বাড়ি-ঘর কিছুই নেই। টাকাপয়সার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করতে পারিনি। সংগঠনের লোকেরা বাড়িতে ডাক্তার নিয়ে আসেন। তারাই এখন আমার মেয়ের সব কিছু করছেন। আমি তাদের জন্য দোয়া করি’। রেহেনার চিকিৎসক ডাঃ মুহাম্মদ কাউছার খান জানান, ‘ আমরা প্রথমে যে অবস্থায় রোগীকে পেয়েছি ওই অবস্থা থেকে এখন রোগী অনেকটা উন্নতির দিকে। নিয়মিত ওষধ সেবন ও ব্যায়ামের পাশাপাশি তার সেবা-যত্ন দরকার। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্ত হতে তাকে দীর্ঘদিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে’। নিচিচা কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মো.আলী আশরাফ খান বলেন,’ এই হতদরিদ্র রোগীকে সুস্থ করতে আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। তার পরিবারে ১ ছেলে ও বাবা ছাড়া আর কেউ নেই। আমরা রোগীর চিকিৎসা-ওষধ প্রদান ও তার পরিবারের খাবার দিয়ে যাচ্ছি। আর এই মানবিক কাজে যারা অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, তারা হলেন আমেরিকা প্রবাসী মোঃ একরামুল হক সরকার, সৌদি প্রবাসী মোঃ মহসীন মিয়া, সৌদি প্রবাসী মোসাঃ নাসরিন হক, জিয়ারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোসাঃ শেলিনা আক্তার, নূরানী কুরআন প্রশিক্ষক শামীমা সুলতানা। আমরা তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং তাদের সকলের জন্য প্রাণখুলে দোয়া করছি’।