যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মাটির ঘর চোখে পড়তো।সবুজ- শ্যামল ছায়াঘেরা শান্তির নীড় মাটির ঘর। বেশি দিনের কথা নয়, প্রতিটি গ্রামে নজরে পড়তো অনেক অনেক মাটির ঘর।
গত কয়েক বছর ধরে মাটির ঘর নতুন করে কেউ আর তৈরি করছেন না। ইট, বালুর সহজলভ্যতার কারণে এবং গরিব মানুষগুলোর আর্থ- সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে চিরায়ত বাংলার মাটির তৈরি এসব ঘর।
যাকে গ্রামের মানুষ বলেন, গরিবের এসি ঘর। ঝড়, বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি প্রচণ্ড গরম ও খুব শীতে বসবাস উপযোগী মাটির তৈরি এসব ঘর এখন আর তেমন একটা নজরে পড়ে না।
গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগ, সরকারি সহায়তা ও বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে এবং কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করে গরিব পরিবারগুলো এখন তৈরি করছে ছোট-বড় আধাপাকা বাড়ি।যার নিচের অংশ ইট-সিমেন্টের তৈরি, উপরের অংশে দেওয়া হয় টিনের তৈরি ছাউনি।
যেসব এলাকায় এঁটেল মাটি সহজলভ্য সেখানে এ ঘরগুলো বেশি তৈরি হতো,ঘরের গাঁথুনি দেওয়ার সময় কারিগররা একটি স্তর (১ থেকে দেড় ফুট) মাটি দিয়ে গেঁথে ফেলেন। এ অংশ শুকিয়ে গেলে আবারো গাঁথুনি শুরু করেন। এভাবে মাটির ঘর তৈরি করে উপরে সন অথবা গোলপাতা দিয়ে থাকেন। ফলে এই ঘরটিতে সবসময় ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে। ঘরের ভিতর ও বাইরে আকর্ষনীয় করার জন্য গ্রামীণ আল্পনায় গৃহবধূরা কাঁদা-পানি দিয়ে লেপ দিয়ে থাকেন। অনেকে এই মাটির ঘরে সিমেন্টের লেপ দিয়ে আরো মজবুত করে তোলেন।
বিগত কয়েক বছর ধরে মাটির ঘর নতুন করে কেউ আর তৈরি করছেন না।