রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

শ্রীমঙ্গলে ১৪ বছরেও চাকরী স্থায়ীকরণ হলো না আবুল কাসেমের
অরবিন্দ দেব,শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি / ২০৫ ভিউ
সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩

মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলে এক বিদ্যালয়ে ১৪ বছর চাকরী করে স্থায়ীকরণ হতে পারলেন না এক নৈশপ্রহরী। শহরের কলেজ রোডে অবস্থিত শাহ মোস্তফা জামেয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী আবুল কাসেমকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে নিয়োগ দেয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে নৈশ প্রহরী আবুল কাশেম জানান,তিনি দীর্ঘ ১৪ বছর যাবত শহরের ঐতিহ্যবাহী শাহ মোস্তফা জামেয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী হিসেবে মাস্টার রোলে কর্মরত ছিলেন। ২০০৭ সালে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাত্র ৩ হাজার টাকা বেতনে তাকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। নিয়োগ প্রদানকালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে জানিয়েছিলেন চাকুরী কিছুদিনের মধ্যে স্থায়ী হবে। চাকুরী স্থায়ী হবার আশায় তিনি একে-একে দীর্ঘ ১৪টি বছর অত্যন্ত সততা ও আন্তরিকতার সাথে এ প্রতিষ্ঠানের নৈশপ্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কিন্তু গত প্রায় ১৫ দিন পূর্বে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে জানান তার বয়স বেশি হওয়ার ফলে চাকুরী স্থায়ীকরণ সম্ভব নয়। তিনি তৎক্ষনাত তার চাকুরী কোনভাবে স্থায়ী করা সম্ভব না হলে তার পুত্র মো. শাকিল আহমদকে তার স্থলে নিয়োগ প্রদানের অনুরোধ করেন। কিন্তু গত ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল বাছিত তাকে জানান,তার পুত্রকেও তার স্থলে চাকুরী প্রদান করা সম্ভব নয়। তিনি নতুন একজনকে নিয়োগ প্রদান করেছেন বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে নৈশ প্রহরী আবেগ তারিত হয়ে বলেন, তিনি নিতান্তই দরিদ্র মানুষ এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাস্টার রোলে চাকুরী করে যে বেতন পেতেন তা দিয়ে ৬ সন্তান, স্ত্রীসহ ৮ জনের পরিবার খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিনানিপাত করছিলেন। তিনি চাকুরী স্থায়ী হলে একটু সুখের মুখ দেখবেন সে প্রত্যাশায় দীর্ঘ ১৪টি বছর নৈশপ্রহরী হিসেবে সামান্য বেতনে চাকুরী করে আসছিলেন। দীর্ঘ এ চাকুরী জীবনে কোনদিন তিনি কর্তব্যে অবহেলা করেন নি। বর্তমানে তার পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি পথে বসার উপক্রম হয়েছেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল শাহ মোস্তফা জামেয়া ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের সায়েদ গাজী জানান,সরকারী বিধি মোতাবেক এমপিওভুক্তিতে বয়স ৩৫ থাকতে হয়। কিন্তু নৈশপ্রহরী আবুল কাশেম এর বয়স ৪৫ বছর হওয়াতে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাকে স্থায়ীকরণ সম্ভব হয়নি। তার ছেলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান,তার ছেলেরও বয়স ১৮ বছরের নিচে। তবে তিনি মানবিক দিক বিবেচনায় নৈশপ্রহরী আবুল কাশেমকে দিনের বেলায় মাস্টার রোলে চাকরী দিয়েছেন বলে জানান।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
জনপ্রিয়
সর্বশেষ